ডিলিট। লগআউট। ভাঙা স্কাইলাইট।


রঙ্গন রায়

 



বালিশের তলা থেকে চিৎকার উঠলো -- - উঠে পড়ো , তারপর বাথরুমে
যাও , তারপর কল খুলে দাও - জল পড়ুক ছড়ছড়-ছড়ছড় ,বালতি
উপচে যাক। তারপর আস্তিন গুটিয়ে নাও। স্কাইলাইট ভেঙে আকাশ ধরতে
উঠে পড়ো। পাখির মত ডানা... কেটে নাও জলপরিদের... মাংস ছড়িয়ে
পড়ুক পায়ের রোলার স্কেটে। যাযাবর হয়ে পড়ো , মাথার ভেতর অনন্ত
ডাক উপেক্ষা করে... তারপর একটানে খুলে দাও পরকীয়ার শাড়ির আঁচল-
এবার ঝুলে পড়ো -- - ইউ ব্লাডি ফুল - হ্যাঙ্ হ্যাঙ্ - আমি ওপার
থেকে কথা বলছি। যেদিন প্রচন্ড প্রস্রাব পেয়ে তুমি বাথরুমে এসে পাজামার
দড়ি খুলতে গিয়ে গিঁট পাকিয়ে দিয়েছিলে... তাকিয়ে আছো কি হাঁ করে!
হ্যাঙ ইয়োর বডি ইন দ্যা স্কাই , ওহ্ ড্যাম ইট , এভাবে না - ফিরে
এসো স্কাইলাইট। ঐ যে আঙটা ঝোলানো আছে ... ওখানে ঢুকিয়ে দাও
শাড়ির আঁচল... তুমি নারী নও , এতোটা দোনোমনা তোমায় মানায়না।
পাজামায় গিঁট পাকিয়েছিলে আর একটা শাড়ির আঁচলে গিঁট পাকাতে
পারিসনা! হিজড়া! তুই মৃত্যুকেও ভয় পাস -জন্মকেও ভয় পাস! না না
না , উত্তেজিত হলে চলবেনা। মাথা ঠান্ডা করো। বি কুল - বি সফট ...
স্কাইলাইটের চাঁদের আলো দুধের মত তোমার শরীরে , গড়িয়ে নামছে
ঘাম। এত টেনশন করছো কেন? ইঁউ বাঁয়ে হাত কি খেল হ্যাঁয় ...
শাড়িতে ফাঁস লাগিয়ে ঠিক পাজামার দড়ির গিঁটে দিয়ে দাও। দেখো বালতি
উল্টে জল পড়ছে... এবার সবাই জল দেখে উঠে আসবে নাবিকের মতো...
তোমার উদ্দেশ্য সাধন হবেনা। কিন্তু আমি তোমাকে হ্যাঙ ইয়োর সুইসাইড
বলতে পারিনা। তোমার স্ত্রীর গর্ভে তুমুল ভাবে তুমি থেকে যাবে পাগল!
ওরা তোমায় কালই অ্যাটেম্প টু সুইসাইড কেসে ফাঁসিয়ে দেবে... লকআপে
পঁচবে... যাও যাও আর দেরি করোনা , তোমার শিশুর জন্মে তুমি ভীত।
তোমার লিঙ্গ এখনো জীবাশ্ম হয়নি। কিন্তু তোমার মন... ঝুলে ঝুলে চাঁদ

নেমে গেলো। ঘড়ির কাটায় প্যানিক তৈরী হচ্ছে ... স্লিপিং ওয়াক।
বাথরুমের দরজা বন্ধ করে দাও... আস্তিন সোজা করো ... তারপর কল
বন্ধ... বালতির জল মাথায় ঢেলে ফেলো ... স্কাইলাইট গুলো ভিজে যাচ্ছে
... শরীর বেয়ে আত্মহত্যাপ্রবন চিন্তা গুলো আলটপকা খসে পড়ছে। শিশুর
মতো কেঁদে ওঠো... তোমার যে শিশু হবে সে যেন তোমার মত
আত্মহত্যায় ভীত না হয়। দরজা গুলো এক এক করে বন্ধ হয়ে যাবে...
মগজের ঘোর কাটুক... আমি বালিশের তুলোর মত উড়ছি তোমার মস্তিষ্কে
... চিন্তার জট গুলো সরল করো। সমীকরণ শেখোনি ক্লাস নাইনে?
তখনতো রিনির শরীর দেখে বারবার হাত চলে যেতো পকেটে - ফাঁটা
কাপড়ের ভেতর দিয়ে লিঙ্গে। এখন হাত বাড়াতে পারছোনা ঐ আঙটায়!
ঘুম থেকে জেগে ওঠো। ফ্রয়েডীয় স্বপ্নতত্ত্বকে গুলি মারো - ফার্ণ চিন্তা
কোরোনা - চিন্তার গ্যাপ গুলোতে আমি আছি , তুমি হাত বাড়িয়ে দাও...
দেহের ভেতর টুপ করে ঢুকে পড়ো... সন্ধান করো... আঙটায় ঝুলবে দেহ
, তুমি পৌঁছে যাবে মনে , সাত মিনিট সক্রিয়... মন চর্যাপদের পাতায়
বিচরণ করবে -

উঁচা উঁচা পাবত তঁহিঁ বসই সবরী বালী।
মোরঙ্গি পীচ্ছ পরহিণ সবরী গীবত গুঞ্জরী মালী।
উমত সবরো পাগল সবরো মা কর গুলী গুডাহা তোহৌরি
ণিঅ ঘরিণী নামে সহজ সুন্দরী।।

ণাণা তরুবর মৌলিল রে গঅণত লাগেলী ডালী।

একেলী সবরী এ বন হিন্ডই কর্ণকুন্ডলব্জ্রধারী।।

জল শহরের কদমতলার মোড়ে রিনিকে প্রকাশ্যে চুমু খাওয়া - তুমি
এখনো ঝুলে পড়ো , ভেবোনা , ঐ দেখো গুলমা জঙ্গল পেরোচ্ছে তোমার
অনিন্দ্যনগরের বিভাজন ... ক্যানেলের পর ক্যানেল পেরোচ্ছে ট্রেন... গুহার
ভেতর অন্ধকার ... উলঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে আদম-ইভ , কুয়াশারা ঢেকে
আছে চাঁদের ঝরনা... আবছা ফাঁকে দেখা গেলো করোনেশন ব্রীজ।
কুয়াশার ভেতর একজন দাঁড়িয়ে আছেন। উনি তোমার ভ্রমের ভেতর

বসবাস কারী কোনো ডাইমেনশন হতে পারেন ,হতে পারেন এই অরন্য
অঞ্চলের আরন্যক... নয়তো তুমি যার সন্ধান করছো ... তিস্তার সবুজ
জল - মৃদু জ্যোৎস্নায় করোনেশন- চারিদিকে জঙ্গল পাহাড় - হাতির
মিলন চিৎকার ... স্বর্গের মত হতেই পারে। কিন্তু এসব স্বর্গ দেখতে গেলে
ঐ ট্রেন থেকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে তিস্তার বরফ ঠান্ডা সবুজ জলে -
নয়তো ঝুলে পড়তে হবে। চয়েস ইস ইয়োর ...
তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছো? দেখো জলপরী রিনির বুকে দুধের ঝরনা ,
করোনেশনের ব্রীজ থেকে করোলার ব্রীজ সর্বত্র মা - মা গন্ধ ... তুমি
এখনো দাঁড়িয়ে আছো? ওই যে সূর্য উঠছে ... অউম জবাকুসুমসংকাশ
কাস্যপেয়ং মা দ্যুতিম ... যাও যাও আর একফোঁটা দেরী করা ঠিক
হবেনা। তুমি এখনো দাঁড়িয়ে আছো?





 

1 comment: